জীবিকার তাগিদে পোশাক কারখানায় কাজ নেন মারুফুর রহমান। কাজের সুবাদে ছেড়েছেন নিজ বাড়ি। কর্মস্থলের আশপাশেই বেঁধেছেন বাসা। ছেলে-মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে ভালোই কাটছিল দিন। হঠাৎ সুখের সংসারে নেমে আসে ঝড়। দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হন মেয়ে মেহজাবিন খন্দকার মাহিদা। মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব।
মেহজাবিন সাভারের স্বর্ণকলি আদর্শ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছেন। মেধাবী এ ছাত্রীর বাবা খন্দকার মারুফুর রহমান সাভারের পোশাক কারখানা আল-মুসলিমে কাজ করেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলা সদরের কাটি গ্রামে। বর্তমানে মেহজাবিন ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি রয়েছেন।
মেহজাবিনের বাবা মারুফুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সাভারের আড়াপাড়ার ইলিয়াস মজুমদারের বাড়িতে ভাড়া থেকে পোশাক কারখানায় চাকরি করছি। সংসার ভালোই চলছিল, মেয়েকে স্থানীয় একটি ভালো স্কুলে ভর্তি করেছিলাম। ইচ্ছা ছিল গার্মেন্টসে কাজ করেও সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করবো। কিন্তু মাত্র অষ্টম শ্রেণিতে পড়তেই মেয়েটা বোন ম্যারো রোগে আক্রান্ত হয়। ডাক্তার দেখিয়ে ৪ সেপ্টেম্বর থেকে চিকিৎসা শুরু করি। চিকিৎসা করতে আমার যা ছিল সবই শেষ করেছি। ২২ সেপ্টেম্বর নতুন করে ধরা পড়ে ব্ল্যাড ক্যান্সার।
তিনি আরো বলেন, মেয়েটা যন্ত্রণায় ছটফট করে। বলে বাবা আমি বাঁচবো তো? কিন্তু বাবা হয়ে ডুকরে কাঁদা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। তবু মিথ্যা আশ্বাস দেই। মা তুমি বেঁচে থাকবে, আবার স্কুলে যাবে। ডাক্তার বলেছে ব্ল্যাড ক্যান্সারের জন্য ১৫-২০ লাখ টাকা লাগবে। আর বোন ম্যারো রোগের চিকিৎসা নিতে যেতে হবে ভারতে। কিন্তু সেখানেও টাকা লাগবে ৪০-৫০ হাজার। এত টাকা আমি কি করে সংগ্রহ করব? হয়তো শেষ পর্যন্ত মেয়েটার সুচিকিৎসা করাতে পারব না। এমন করেই ধুঁকে ধুঁকে মরবে মেয়েটা।
মেহজাবিন বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলার ডি-ব্লকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মেহজাবিনকে বাঁচাতে অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তাই মানবিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন মেহজাবিনের পরিবার। সংকোচ ভুলে মেয়েকে বাঁচাতে এই সাহায্যের আবেদন করেন তিনি।
তিনি বলেন, রোগব্যাধি কখন কাকে আক্রমণ করবে তা কেউ বলতে পারবে না। আমার ছোট্ট মেয়েটা যত কষ্ট পাচ্ছে আল্লাহ যেন অন্য কাউকে এ কষ্ট না দেন। আল্লাহর কাছে দোয়া করা ছাড়া আর কিছু করার ক্ষমতা নেই আমার। ব্যর্থ বাবাটার মেয়ের চিকিৎসার জন্য মানবিক সহযোগিতা পেলে একটু হলেও শান্তি পেতাম। গার্মেন্টসের কোনো ফান্ড, সরকার কিংবা কোনো সংস্থা সহযোগিতা করলেই আমার মেয়েটার কষ্ট লাঘব হতো। কেউ সাহায্য করতে চাইলে এ নম্বরে ০১৭০৩২২২৪২৫ বিকাশ করতে পারবেন।