ওরা পৃথিবীতে এসেছিল একসঙ্গে, ছেড়েও গেল একসঙ্গে

বাথরুমে বালতির পানি নিয়ে খেলছিল দুই মেয়ে। সন্তানদের খেলতে দেখে ফ্ল্যাটের বাইরে ময়লা ফেলতে গেলেন মা। দু-তিন মিনিট পর ফিরে এসেই দেখেন আদরের মেয়ে দুটি আর বেঁচে নেই। বালতিতে ডুবে রয়েছে তাদের মাথা আর পা বাইরে।

শিশু দুটি বালতির পানিতে ডুবে মারা গেছে বলে ধারণা তাদের নানার। রোববার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার পুরাতন সিএনবি ঘাট এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলো- সিএনবি ঘাট এলাকার পুলিশের কনস্টেবল এবাদ আলীর মেয়ে সারা ও সাবা। তাদের বয়স তিন বছর।

শিশুদের মা ও নানা জানান, বাথরুমে পানি দিয়ে খেলছিল সারা ও সাবা। একপর্যায়ে তারা বালতিতে পড়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। সারা ও সাবার বাবা কনস্টেবল এবাদ আলী ঢাকায় থাকেন। ওই বাড়িতে দুই মেয়েকে নিয়ে একাই থাকতেন তাদের মা। তবে কাছেই সারা-সাবার নানা ও দাদার বাড়ি। শিশুদের নানা মাজেদুল ইসলাম জানান, মাসখানেক আগে এ বাড়ির দোতলায় দুই রুম ভাড়া নেন তার মেয়ে। তার মেয়ের জামাই ছুটিতে ঢাকা থেকে সেখানে যেতেন।

শিশুদের মা নাইমা খাতুন জানান, এ বাড়িতে পানি সংকট হয় প্রায়ই। তাই যখন পানি আসে তখন তিনি বালতি ভরে রাখেন। তিনি জানান, সকালে মেয়েরা বাথরুমে গিয়ে বালতির পানি নিয়ে খেলছিল। তাদের সেখান থেকে সরে আসতে বলে ফ্ল্যাটের বাইরে ময়লা ফেলতে যান তিনি। দু-তিন মিনিট পর ফিরে এসেই দুই বালতিতে দুই মেয়ের মাথা ডুবে থাকতে দেখেন।

পা ছিল বালতির বাইরে। নাইমা আরো জানান, তিনি বাচ্চাদের তুলে মেঝেতে শুইয়ে রেখে তাদের নানা-নানিকে খবর দেন। পরে সবাই তাদের সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরও বলেন, ওরা পৃথিবীতে একসঙ্গে এসেছিল। আবার ছেড়েও গেল একসঙ্গে। যা করত সবই একসঙ্গেই করতো।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক নুরুন্নাহার নাসু বলেন, শিশু দুটি মৃত অবস্থায় সকাল ৯টার দিকে হাসপাতালে আনেন স্বজনরা। স্বজনদের ভাষ্য অনুযায়ী শিশু দুটি বালতির পানিতে ডুবে মারা গেছে। তবে ময়নাতদন্তের আগেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বলা যাবে না। শিশুটির বাবা ঢাকা থেকে আসছেন। এরপর ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত হবে।

About reviewbd

Check Also

বাংলাদেশের ইলিশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে কলকাতাবাসী

প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে শুক্রবার থেকে কলকাতার বাজারে আসতে শুরু করেছে বহুল প্রতীক্ষিত বাংলাদেশের ইলিশ। তবে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *