খুলনার তেরখাদা উপজেলায় শিশুকন্যা তানিশা হত্যার দায়ে সৎ মা তিথী আক্তার মুক্তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। আজ সোমবার খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, তানিশা আড়কান্দি গ্রামের আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মো: খাজা শেখের কন্যা। খাজা শেখের বান্দরবনে পোস্টিং ছিল। আগের স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর খাজা ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি ফকিরহাট উপজেলার আট্রাকি গ্রামের মৃত হোসেন আলী শেখের মেয়ে মুক্তাকে বিয়ে করেন। মুক্তা বিয়ের পর মোবাইলে আসক্ত হন। অনেকের সাথে কথা বলতেন। এ নিয়ে খাজা স্ত্রীকে সন্দেহ করেন।
এ বছরের ২ এপ্রিল ম্যাসেঞ্জারে ফারাবি প্রসেনজিত নামে এক ব্যক্তির সাথে মুক্তার কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে খাজা স্ত্রীকে তালাক দেয়াসহ বিষয়টি সকলকে জানিয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এরপর মুক্তা খাজার ওপর প্রতিশোধ নিতে তার আগের পক্ষের মেয়ে তানিশাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তানিশা মুক্তার সাথে একই বিছানায় ঘুমাতো।
গত ৫ এপ্রিল রাত নয়টার দিকে ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমন্ত তানিশার ঘাড়ে ও মাথায় আঘাত করতে থাকেন। শব্দ শুনে তানিশার দাদী দরজা খুলতে বললে তিনি খোলেননি। পরবর্তীতে তানিশার চাচা রাজু শেখ বাড়ি এসে দরজা খুলতে বললে মুক্তা বাইরে বের হয়। ঘরে ঢুকে তানিশার নিথর দেহ খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন তানিশার দাদা আবুল বাশার শেখ এ ঘটনায় তেরখাদা থানায় মুক্তাকে আসামি করে মামলা করেন। এ বছরের ৩১ মে মামলার চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। এ মামলায় মোট ২২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌশুলী ছিলেন জেলা পিপি শেখ এনামুল হক।