করোনার অনুদান পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে অন্তত ১৬ হাজার নিম্নআয়ের মানুষের ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জান্নাতুল ফেরদৌস নামে এক নারীকে আটক করেছে চট্টগ্রাম পুলিশ।
রিকশাচালক ও গৃহকর্মী থেকে শুরু করে প্রতিবন্ধীদের কাছ থেকেও টাকা আদায় করেন এই কথিত এনজিও কর্মকতা। উত্তেজিত জনতার রোষানল থেকে উদ্ধারের পর পুলিশ ওই নারীকে গ্রেফতার দেখিয়েছে।
সোমবার (২২ নভেম্বর) রাতে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ভেতরে ভিড় করে আছে কয়েকশ নারী পুরুষ। তাদের সবার দাবি, পুলিশের হাতে গ্রেফতার জান্নাতুল ফেরদৌস নামে কথিত এনজিও কর্মকর্তাকে তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। জনগণই তার প্রতারণার বিচার করতে চায়। অবশ্য নগরীর হামজারবাগ এলাকায় উত্তেজিত জনতার হাত থেকে জান্নাতুল ফেরদৌসকে উদ্ধার করে আনে পুলিশ।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) পাঁচলাইশ থানার ওসি জাহিদুল কবির বলেন, করোনার অনুদান পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে কয়েক হাজার মানুষের কাছে অর্থ নিয়েছেন ওই নারী। এখন উত্তেজিত জনতা তার প্রতারণার বিচার চাইছেন। আমরা তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারের কাছ থেকে মাথাপিছু ৫ হাজার টাকা করে এনে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন কথিত এই এনজিও কর্মকর্তা। নাম নিবন্ধনের কথা বলে বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে আদায় করা হয়েছে ২০০ টাকা করে। কিন্তু চার মাস পেরিয়ে গেলেও পরিশোধ করা হয়নি অনুদানের টাকা।
ভুক্তভোগীদের দাবি, অনুদান দেওয়ার কথা বলে নাম নিবন্ধনের জন্য বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে প্রায় ১৬ হাজার মানুষের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে নিয়েছেন ওই নারী। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও অনুদান পাননি কেউই।
তবে অভিযুক্ত কথিত এনজিও কর্মকর্তার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায়ের সত্যতা স্বীকার করে অনুদান পেতে কিছুটা দেরি হওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেন।
অভিযুক্ত এনজিও কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমরা তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি অনুদান দেওয়ার জন্য। অনুদান পেতে কিছুটা দেরি হওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে সেইভ অ্যাজ ইউ আর্ন নামের এই এনজিওটি আগে কান্তা ইসলাম নামে আরেকজনের কাছে ৭ লাখ টাকায় বিক্রি করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু দায়িত্ব স্থানান্তর না করেই জান্নাতুল ফেরদৌস প্রতারণা করছিলেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে পাঁচলাইশ থানায় পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।