মনির খাঁন হচ্ছে বাংলাদেশের অপ্রতিদ্বন্ধি এক কন্ঠ শিল্পী। তাঁর শৈশব কেটেছে গ্রামে। তিনি গ্রামে মাছ ধরেছেন। পুকুরে সাঁতার কেটেছেন। তিনি অঞ্জনা নামক এক মেয়েকে ভালবাসতো তাকে না পেয়ে তিনি অঞ্জনা নাম দিয়ে তাঁর অসংখ্য গানে কন্ঠ দেন। গানগুলি এখনো দর্শকদের হ্নদয় স্পর্শ করে।
জানা গেছে অঞ্জনা এখন সৌদি আরব আছেন। এদিকে নি গানের জগতে আসার পর এখনো তাঁর অঞ্জনার সাথে দেখা হয়নি মনির খাঁনের। এই বিষয়ে মনির খাঁন বলেন, আগে অনেক ইচ্ছে হতো অঞ্জনার সাথে দেখা করতে কিন্তু এখন আর তেমন হয়না কারণ এখন এক অঞ্জনার বদলে লাখো দর্শকের ভালবাসা পেয়েছি।
জেনে নিন মনির খানের জীবন কাহিনী!
গুনী এই সংগীত শিল্পী ১৯৭২ সালের ১ আগষ্ট বাংলাদেশ এর সীমান্তবর্তী জেলা ঝিনাদহ এর মহেশপুর উপজেলার মদনপুর নামক গ্রামে জন্মগ্রহন করেন।
তার ছোট বেলা থেকেই গানের প্রতি একটা সহজাত আকর্ষণ ছিল। এলাকার অনেক ওস্তাদের কাছে গান শিখেছেন। তবে সঙ্গীতের হাতেখড়ি হয় মূলত ওস্তাদ রেজা খসরুর কাছে। পরবর্তীতে স্বপন চক্রবর্তী, ইউনুস আলী মোল্লা, খন্দকার এনায়েত হোসেনসহ আরও কয়েকজন ওস্তাদের কাছে তিনি গানের তালিম নিয়েছেন। বাগেরহাট জেলার বাসিন্দা খন্দকার এনায়েত হোসেন ১৯৮৮ সাল থেকে কালিগঞ্জ গুঞ্জন শিল্পীগোষ্ঠি একাডেমীতে ১৫ দিন পর পর এসে গান শেখাতেন। সঙ্গীতের ভিত্তি গড়ে উঠেছে মূলত ওস্তাদ খন্দকার এনায়েত হোসেনের কাছেই।
১৯৮৯ সালে মনির খাঁন খুলনা রেডিওতে অডিশন দিয়ে আধুনিক গানের শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৯১ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত তিনি এখানে একজন নিয়মিত শিল্পী হিসেবে গান করেন। ১৯৯১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর এখান থেকে এন. ও. সি নিয়ে তিনি ঢাকায় চলে আসেন।
ঢাকাতে আসার পরও তিনি বেশ কিছু ওস্তাদের কাছে গান শিখেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন আবুবক্কার সিদ্দিক, মঙ্গল চন্দ্র বিশ্বাস, সালাউদ্দীন আহমেদ, অনুপ চক্রবর্তীসহ আরও অনেকে।
স্কুল শিক্ষক পিতার অসীম অনুপ্রেরণায় সংগীতে যাত্রা শুরু করা গুনি শিল্পী মনির খান আজ বাংলাদেশের অপ্রতিদ্বন্দ্বী একজন সংগীতের উজ্জল নক্ষত্র। তিন তিনবার জাতীয় পুরস্কারসহ ছোট বড় অসংখ্য পুরস্কারের বিরল সম্মানে স্বীকৃত এই কালজয়ী জীবন্ত কিংবদন্তী গায়ক।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও মানুষের হৃদয়ে চিরস্থায়ী জায়গা করে নেয়া একমাত্র সৌভাগ্যবান সংগীত শিল্পী মনির খান।
সংগীতের এই উজ্জল নক্ষত্রের জন্ম দিনের শুভেচ্ছা বিনিময়ের আলাপচারিতায় তিনি দেশের এক অনলাইন নিউজ পোর্টালকে বলেন, আমি যতদিন বাঁচবো দেশের মানুষের জন্য গেয়ে যাবো। আমার এই কন্ঠ আমার দেশের জন্য। আমি মরণের আগের দিন পযর্ন্ত আমার দেশ ও দেশের মানুষের কল্যানে কাজ করে যাবো। আমাকে আজকের মনির খাঁন বানিয়েছেন আমার দেশের মানুষ। আমি চিরকৃতজ্ঞ।
পাঠকদের মনির খাঁনের কথা মনে হলেও চলে আসে আরেকটি নাম আর সেই নামের সাথে আমরা সবাই পরিচিত ‘অঞ্জনা’। আজকে মনির খানের জন্মদিন। আর এই দিনে তিনি অঞ্জনাকে মনে করবেন না সেটা তো হয়না।
অঞ্জনার উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চান কিনা সে বিষয়ে মনির খাঁনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আসলে নতুন করে আমার কিছু বলার নাই। আমার গানে গানে আমি প্রতিটি মুহুর্তে সবাইকে বুঝিয়েছি। আর আজকে বলতে গেলে সে যেখানে থাক ভালো থাক।
উল্লেখ্য, মনির খাঁনের প্রথম একক অ্যালবাম ‘আমার কোনো দোষ নেই’ বাজারে আসে ১৯৯৫ সালে। সেই অ্যালবামে ‘অঞ্জনা’ শিরোনামে একটি গান করেন তিনি। গানটি বেশ জনপ্রিয় হয়। সেই শুরু থেকে আজ পযর্ন্ত তিনি এই ভালোবাসার মানুষের জন্য একটি হলেও গান গেয়েছেন। মনির খাঁন তার গানের ৪১টি অ্যালবামের মধ্যে ‘অঞ্জনা’ কে নিয়ে গান রেখেছেন।