আমাদের দেশে দুই ধরনের ইমপ্ল্যান্ট হয়। একটি হচ্ছে, সিঙ্গেল রড, এটি তিন বছরের জন্য, যা ইম্প্লানন নামে পাওয়া যায়। আরেকটি হলো, ডাবল রড, যেটিকে আমরা ডেলি বলে থাকি। এটি পাঁচ বছরের জন্য কার্যকর। এ দুই পদ্ধতিতে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া একদমই নেই এবং সফলতা অনেক বেশি ৯৯ শতাংশ।
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের অবস অ্যান্ড গাইনি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. নফিছা খাতুন নফছি এসব বিষয় জানান।
তিনি বলেন, বার্থ স্পেসিং খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফ্যামিলি প্লানিং কার্যক্রম ত্বরান্বিত বা যারা প্রথম সন্তান নেওয়ার পর ৩-৫ বছর অপেক্ষা করতে চান, তাদের জন্য কার্যকর পদ্ধতি হলো ‘ইমপ্ল্যান্ট’।
এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতি। এতে সাধারণ কাজকর্মে নারীদের কোনো সমস্যা হয় না। যৌনমিলনেও তেমন সমস্যা হয় না। তারা যখন মনে করবেন, তখনই সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করতে পারবেন। পদ্ধতি ছেড়ে দিলেই সন্তান নেওয়ার সক্ষমতা চলে আসে। এজন্য এই পদ্ধতি বার্থ স্পেসিংয়ের জন্য সবচেয়ে ভালো।
তবে আমাদের দেশের নারীদের মধ্যে এ ধরনের ডিভাইসের ক্ষেত্রে কিছু ধারণা কাজ করে। কোনো ধরনের অতিরিক্ত ডিভাইস শরীরে পরতে চান না। কারণ আমাদের দেশের মায়েরা এটাতে অনেক বেশি ভয় পান। মনে করেন, অনেক সময় ভেতরে চলে যাবে, মাংসের ভেতরে চলে যাবে। কিন্তু তাদের জন্য পরামর্শ হচ্ছে, শুধু এটা পরে বসে থাকলেই হবে না। এটার একটু ফলোআপ আছে। যখন আমাদের কাছে আসবে, আমাদের দেশে অনেক সেন্টারগুলোতেই কিন্তু এটা পরানো হয়। যেমন- মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে, তারপরে মেডিস্ট্রোপসে এবং বর্তমানে অবস্ট্রিটিটিকস ও গাইনোকোলজিরাও কিন্তু এটি পরাচ্ছেন।
তাদের কাছে আমার একটা পরামর্শ বা উপদেশ হচ্ছে, এটা পরানোর পরে তারা অবশ্যই চেকআপে আসবেন। প্রথমে এক মাস পর একবার দেখা করবে, এরপর ছয় মাস পর, এরপর এক বছর পর। এই সময়ে তাদের সাথে আমরা বিভিন্ন রকম কাউন্সেলিং করব। এটা নেওয়ার পর তার কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না, তার ব্লিডিংয়ের মতো কোন সমস্যা হচ্ছে কি না বা মাসিক বন্ধ থাকছে কি না।
অনেকের ভ্রান্ত ধারণা হচ্ছে, এটি পরার পর সবারই ওজন বেড়ে যায় এবং একটু একটু ব্লিডিং হয়। কেউ কেউ বলছেন, আমার পুরা তিন বছর বা পাঁচ বছরে মাসিক হচ্ছে না। তো এসবের জন্য আমাদের কাছে চিকিৎসার জন্য আসলে, চিকিৎসা নেওয়ার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা যায়।
তাই আমাদের দেশের মায়েদেরকে বলতে চাই, এ পদ্ধতিটা কিন্তু আপনাদের জন্য অনেক ভালো। কারণ এই তিন বছর বা পাঁচ বছর যেটার জন্যই নেন, কোনোভাবেই প্রেগন্যান্সি আসবে না। আনওয়ান্টেড প্রেগনেন্সি থেকে তারা রক্ষা পাবেন। তার টেনশন করতে হবে না। অন্য পদ্ধতি যেমন- পিল খেতে গেলে প্রতিদিন পিল খেতে হয়, তার মিসিং পিল হচ্ছে, তার প্রেগনেন্সি নিয়ে টেনশন করতে হচ্ছে। এজন্য তাদের এ পদ্ধতিটা ভালো। ভ্রান্ত ধারণা থেকে বের হয়ে আসা উচিত।
সূত্র: ডক্টর টিভি