দাঁত ব্যথার অন্যতম কারণ হল ক্যারিজ বা দন্তক্ষয়। অনেকের কাছে এই রোগটি দাঁতের পোকা নামে পরিচিত। যদিও চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর কোনো ভিত্তি নেই। দাঁতের সব রোগের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বেশি হয়। বর্তমানে দাঁতের ক্ষয় ও দাঁতে ছিদ্র হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।দাঁতের সব রোগের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বেশি হয়। সাধারণত শিশু, টিনএজার ও বয়স্কদের এই সমস্যাটি বেশি হতে দেখা যায়।
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলেই দাঁত ক্ষয় হয়ে থাকে। ঘন ঘন স্ন্যাক্স ও ড্রিঙ্কস খাওয়া, অনেকক্ষণ যাবত দাঁতের মধ্যে খাবার লেগে থাকা, ফ্লোরাইড এর অপর্যাপ্ততা, মুখ ড্রাই থাকা, মুখের স্বাস্থ্যবিধি না মানা, পুষ্টির ঘাটতি এবং ক্ষুধামন্দার সমস্যা থাকা ইত্যাদি কারণে দাঁতে ছিদ্র ও দাঁত ক্ষয় রোগ হয়ে থাকে। লক্ষণ সমূহ:
দাঁতে প্রচন্ড ব্যাথা হয় : কোন কিছু খাওয়া বা পান করার সময় হালকা থেকে তীব্র ব্যাথা হয়। আক্রান্ত দাঁতে গর্ত দেখা যায় এবং দাঁতের উপরে সাদা, কালো বা বাদামী দাগ দেখা যায়। যদি প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করা না হয় তাহলে ইনফেকশন বৃদ্ধি পেয়ে ব্যাথা ক্রমেই অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে এবং দাঁতটি হারানোর সম্ভাবনা ও দেখা দিতে পারে। ক্যাভিটির চিকিৎসায় দাঁতে ফিলিং করা হয় ও ক্যাপ পরানো হয় এবং দাঁতের অবস্থা খুব খারাপ হলে রুট ক্যানেল করা হয়। এই সব চিকিৎসা খুব ব্যায় বহুল এবং কষ্টদায়ক।
ঘরোয়া কিছু উপায়ে দাঁতের ব্যাথা কমানো যায়। জেনে নিন সেই উপায় গুলো সম্পর্কেঃ
১। হলুদ গুঁড়ো : দাঁতের ছিদ্রের সমস্যায় হলুদ গুঁড়ো ব্যাবহার খুবই উপকারি। হলুদে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী উপাদান আছে যা দাঁতের ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশন কে ধ্বংস করতে পারে এবং এর প্রদাহ রোধী উপাদান দাঁতের ব্যাথা উপশম করতে পারে। হলুদ গুঁড়া ও পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এবং আস্তে আস্তে ব্যাথার দাঁতে লাগান,ব্যাথা কমে যাবে।
২। পেঁয়াজ : পেঁয়াজের একটি স্লাইস আক্রান্ত দাঁতের উপরে চেপে রাখুন দাঁতের ব্যাথা কমে যাবে। নিয়মিত পেঁয়াজ খেলে দাঁত ক্ষয় এর সমস্যা কমায়। নিয়মিত পেঁয়াজ দেয়া খাবার খেলে দাঁত ক্ষয় সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়।
৩। লবণ : লবনে অ্যান্টিসেপ্টিক ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে, যা মুখে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ব্যাহত করে প্রদাহ কমাতে ও ব্যাথাকে সহনীয় করতে সক্ষম। ১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ১ টেবিল চামুচ লবণ মিশিয়ে মুখে নিয়ে ১ মিনিট রাখুন এবং আক্রান্ত দাঁতের প্রতি মনোযোগ দিন।
এভাবে দিনে ৩ বার করে করুন ব্যাথা কমে যায়। এছাড়াও ১ টেবিল চামুচ লবণ অল্প সরিষার তেলের সাথে অথবা লেবুর রসের সাথে মিসিয়ে পেস্ট তৈরি করে মাড়িতে ম্যাসাজ করুন কয়েক মিনিট। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে কুলি করে নিন। এভাবে দিনে ২ বার করে কয়েকদিন করুন, ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হবে।
এছাড়াও বেকিং সোডা, অ্যালোভেরা, লবঙ্গ, রসুন, পুদিনা, আপেল সিডার ভিনেগার ইত্যাদি ব্যবহার করেও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন ও দাঁতের ব্যাথা কমানো যায়। সকালে ও রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশ করুন। দাঁত পরিষ্কার করতে ফ্লস ব্যবহার করুন এবং প্রতিদিন জিহ্বা পরিষ্কার করুন।