সম্প্রতি কয়েক দফা ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে বিভাগীয় শহর সিলেট। এরপরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশে। ‘ডাউকি ফল্ট’ ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে গত পাঁচশ থেকে এক হাজার বছরে বড় ধরনের কোনো ভূমিকম্পের উৎপত্তি না হওয়ায় সিলেটের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পকে বড় ধরনের পূর্বাভাস হিসেবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে ২০১৫-১৬ সালে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরে আট মাত্রার ভূমিকম্প হলে এক থেকে দুই লাখ লোকের প্রাণহানি হতে পারে।
তাই জরুরি ভিত্তিতে ভবনগুলোর ভূমিকম্প প্রতিরোধ ক্ষমতা পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। ভূমিকম্পের কারণে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও ঝুঁকি কমাতে সচেতনতা মহড়া বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তারা।
ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান ও বার্মিজ- এ তিন গতিশীল প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান। এর মধ্য ইন্ডিয়ান ও বার্মা প্লেটের সংযোগ স্থলে অবস্থিত সিলেট যার উত্তরে ‘ডাউকি ফল্ট’।
এ প্লেটগুলো সক্রিয় থাকায় এবং পরস্পর পরস্পরের দিকে ধাবমান হওয়ায় এখানে প্রচুর শক্তি জমা হচ্ছে। আর জমে থাকা এসব শক্তি যে কোনো সময় ভূমিকম্পের মাধ্যমে বেরিয়ে আসতে পারে। ফলে অতিমাত্রায় ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্থ অবজারভেটরির পরিচালক ও ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার গণমাধ্যমকে বলেন, হবিগঞ্জ অঞ্চলে ১৯১৮ সালে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার এবং ১৯২২ সালে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। ফলে ‘ডাউকি ফল্ট’ খুব সক্রিয়।
ডাউকি ফল্ট ও টেকনাফ সাবডাকশন জোনে হাজার বছর ধরে যে পরিমাণ শক্তি ক্রমান্বয়ে সঞ্চয় হয়ে আসছে, তাতে আট মাত্রার অধিক ভূকম্পন হতে পারে। এ শক্তি একবারেও বের হতে পারে; আবার আংশিক বের হতে পারে বলে জানান এই ভূতত্ত্ববিদ।
বুয়েট সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. দেলওয়ার হোসাইন বলেন, ‘সাত মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হলে ঢাকা শহরসহ বিভিন্ন জায়গার স্ট্রাকচার নষ্ট হয়ে যাবে। কারণ বেশিরভাগ স্ট্রাকচার সাতের বেশি ভূমিকম্পের প্রেসার নিতে পারবে না।