খর্বাকৃতির ষাঁড়টি ক্ষিপ্রগতিতে দৌড়ায়। মালিক নেত্রকোনার আজিজুর রহমান শখের বশে বছরখানেক আগে কিনেছিলেন। আর্জেটিনা ফুটবল দলের সমর্থক আজিজুর প্রিয় ফুটবল তারকার নামে এর নাম রাখেন ‘মেসি’। সেই মেসির বয়স এখন চার বছর। ওজন মাত্র ৩৭ কেজি। ষাঁড়টির উচ্চতা ২৭ ইঞ্চি, দৈর্ঘ্য ২৪ ইঞ্চি। তবে ওজন উচ্চতা যা–ই হোক, মেসির দাম ১০ লাখ টাকা হাঁকছেন আজিজুর।
আজিজুরের বলছেন, ইতিমধ্যে মেসির দাম উঠেছে ৪ লাখ টাকা। আর চার বছর বয়সের এটাই দেশের সবচেয়ে ছোট ষাঁড় বলে দাবি করছেন আজিজুল।
আজিজুরের বাড়ি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কমলপুর গ্রামে। তিনি খালিয়াজুরি উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা। আজ শনিবার দুপুরে আজিজুরের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, মেসিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে বাড়ির সামনে আমগাছের সঙ্গে। ষাঁড়টি একঝলক দেখতে ওই বাড়িতে ভিড় করছেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে জাহিদ হাসান নামের এক ব্যক্তি জানান, তিনি ষাঁড়টির খবর পেয়ে নেত্রকোনার নাগড়া এলাকা থেকে এসেছেন।
শৌখিন জাহিদ হাসান ষাঁড়টি কিনতে চান। কিন্তু মালিক দাম বেশি চাওয়ায় তিনি পিছিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, ‘এ রকম ষাঁড় আমি আর কখনো দেখিনি। শুনেছি ষাঁড়টি বিক্রি হবে। দাম নাগালের মধ্যে থাকলে কিনে নিতাম। কিন্তু মালিক ১০ লাখ টাকা দাম চাচ্ছেন।’
কমলপুর গ্রামের কৃষক রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘গরুডা আকারে ছুডু (ছোট) হইলেও দৌড়ে সেরা। এর শক্তিও বিরাট। ছাড়া পাইলে সহজে ধরন যায় না। ধইরা রাখতে দুইজন মানুষ লাগে।’
মেসির মালিক আজিজুর বলেন, ‘আমি খালিয়াজুরিতে চাকরি করি। সেখানে আসা-যাওয়ার পথে খর্বাকৃতি ষাঁড়টির সন্ধান পাই। মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর থেকে এক বছর আগে শখের বশে এটি ৪০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছিলাম। বাড়িতে এনে এটির ক্ষিপ্রগতি দেখে প্রিয় ফুটবল তারকার নামের সঙ্গে মিলিয়ে মেসি নাম রেখেছি। গত মাসে উপজেলা প্রাণিসম্পদ মেলায় মেসিকে প্রদর্শন করা হলে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে যায়। এখন প্রতিদিন মানুষ ষাঁড়টি দেখতে আসে।’
আজিজুর জানান, এটি ছোট হওয়ায় খাবার খুব কম প্রয়োজন হয়। ঘাস, খড়, ভুসি এসবই খায় ষাঁড়টি। এর দাঁত চারটি। গত মাসে মাহবুব আলম নামের এক খামারি এটিকে কিনতে চার লাখ টাকা দাম করেছেন। কিন্তু তিনি বিক্রি করেননি। ১০ লাখ টাকা হলে বেচে দেবেন। আজিজুর মনে করেন, দেশে এই বয়সী খর্বাকৃতির ষাঁড় আর নেই। তিনি এটির নাম গিনেস বুকে তুলতে চান।
কেন্দুয়ার রাজনগর গ্রামের খামারমালিক মাহবুব আলম বলেন, ‘আমার গরুর খামার আছে। সেখানে ৬৫টির মতো ষাঁড় ও গাভি আছে। তাই মেসি নামের গরুটিকে দেখার পর কিনতে চাইছি। চার লাখ টাকা দাম বলেছি। কিন্তু এর মালিক এই দামে বিক্রি করতে চাইছেন না।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মনোরঞ্জন ধর বলেন, গরুটি দেশি জাতের। এর জন্ম দেওয়া গাভিটি স্বাভাবিক ছিল বলে তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন। এটি ওই গাভির ৩ নম্বর বাছুর ছিল। জন্মগত ত্রুটির কারণে এমনটি হয়ে থাকতে পারে। দেশে এ রকম ছোট ষাঁড় তাঁর জানামতে আর নেই বলে জানালেন এই কর্মকর্তা।