রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিং এলাকায় গতকাল শুক্রবার সকালে এক নারী গার্মেন্টকর্মীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক ট্রাকচালকের বিরুদ্ধে। ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন সেকুল মিয়া নামের ওই ট্রাকচালককে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, সাবেক স্ত্রীকে হত্যা করতে গিয়ে ভুলক্রমে ওই গার্মেন্টকর্মীকে কুপিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন সেকুল।
নিহত গার্মেন্টকর্মীর নাম আয়েশা সিদ্দিকা (২৬)। তিনি সাইনেক্স নামের একটি গার্মেন্ট কারখানার অপারেটর ছিলেন। স্বামী-সন্তান নিয়ে তিনি নবোদয় হাউজিং এলাকায় বসবাস করছিলেন। আয়েশার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর জেলার ভবানীপুরের বানিয়াপাড়ায়।
মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ জানায়, ট্রাকচালক সেকুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছেন, সাবেক স্ত্রী শেফালি আক্তারের সঙ্গে চার বছর আগে বিচ্ছেদ হয় তাঁর। ফের বিয়ের আশ্বাস দিয়ে কয়েক মাস আগে শেফালি তাঁর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর তিনি জানতে পারেন, ওই টাকা নেওয়ারও এক মাস আগে শেফালি অন্যত্র বিয়ে করেছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শেফালিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ গত রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সাবেক স্ত্রী শেফালিকে হত্যার পরিকল্পনা করে তাঁর পিছু নেন ট্রাকচালক সেকুল মিয়া। ভোরের দিকে তিনি (সেকুল) মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিং এলাকায় গিয়ে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁর সাবেক স্ত্রীকে বোরকা পরা অবস্থায় একটি রিকশায় উঠতে দেখেন তিনি। সামনে আগানোর এক পর্যায়ে একটি রিকশার গতি রোধ করেন তিনি। এরপর সঙ্গে থাকা কাঁচি দিয়ে ওই রিকশাযাত্রী বোরকা পরিহিতা নারীকে একের পর এক আঘাত করেন। উপর্যুপরি আঘাতে রিকশা থেকে ওই নারী নিচে পড়ে যান। এর পরই সেকুল দেখতে পান, ওই নারী তাঁর স্ত্রী নন। তাঁর সাবেক স্ত্রী শেফালি তখন পাশেই অন্য একটি রিকশায় ছিলেন।
আয়েশাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সেকুল মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের হেফাজতে আছেন। রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।
ঢামেক হাসপাতাল মর্গে আয়েশার স্বামী রুবেল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, আয়েশাকে ছিনতাইকারীরা কাঁচি দিয়ে আঘাত করেছিল বলে প্রথমে তিনি ধারণা করেছিলেন। পরে পুলিশের মাধ্যমে বিস্তারিত ঘটনা জানতে পারেন তিনি। তিনি স্ত্রীর হত্যাকারীর কঠোর শাস্তি দাবি করেন। পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি রুবেল জানান, তাঁদের আরিফা নামে পাঁচ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।