অভি-যুথির দীর্ঘদিনের প্রেম। করেছেন বিয়েও। তবে মেনে নেয়নি অভির পরিবার। ভালোবেসে বিয়ে করলেও স্ত্রীকে ঘরে তুলতে পারেননি স্বামী। শুধু একটাই আপত্তি; যুথির পরিবার নিম্ন বংশের। আর এ জাত-পাত নিয়েই বাড়তে থাকে মতানৈক্য। শেষমেশ ভালোবাসার মানুষটিকেই কু;পি;য়ে হ;ত্যা করেন অভি। নিজেও বেঁচে থাকেননি। ছু;রি মেরে নিজেকেও শেষ করে দেন।
ঘটনাটি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের। মঙ্গলবার রাত প্রায় ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অভি। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
নিহত ২৩ বছর বয়সী যুথি সূত্রধর সীতাকুণ্ড পৌর শহরের প্রেমতলা এলাকার বাসিন্দা রামচন্দ্র সূত্রধরের কলেজপড়ুয়া মেয়ে। আর ২৭ বছরের অভি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা কালীপুর বণিক পাড়ার শুধাংশ ধরের ছেলে।
জানা গেছে, যুথির সঙ্গে অভির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুই বছর আগে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই যুথিকে বউ করে নিজ ঘরে তুলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন অভি। কিন্তু এতে আপত্তি জানায় পরিবার। অভি উচ্চ বংশের ছেলে। যুথির পরিবার তাদের তুলনায় নিম্ন বংশের। এটিই ছিল অভির পরিবারের আপত্তি। এ কারণে আর শেষ পর্যন্ত শ্বশুরবাড়িতে স্থান হয়নি যুথির। যদিও তারা ভাড়া বাসায় থাকতেন।
শ্বশুরবাড়িতে না নেয়ায় দিন দিন স্বামীর সঙ্গে যুথির মতানৈক্য বাড়তে থাকে। এর জেরে দেড় মাস আগে স্বামীকে ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে যান যুথি। এতে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয় অভির মনে। ভালোবাসার মানুষটিকে হারিয়ে তিনি মা;দ;কা;স;ক্ত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ২৭ অক্টোবর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্ত্রী যুথিকে ফিরিয়ে নিতে চান তিনি। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে আর যাবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন যুথি। এতেই চরম ক্ষোভে নিজের সঙ্গে আনা ধারালো ছু;রি দিয়ে যুথিকে এলোপাতাড়ি কোপান। শরীরের বিভিন্ন অংশে ১৯টি ছু;রিকাঘাতে যুথি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। শেষে নিজেই নিজের পেটে ছু;রি;কা; ঘা;ত করতে থাকেন অভি। এতে র;ক্তা;ক্ত ও গুরুতর আহত হন নিজেও। পরে তাকে চমেক হাসপাতালে নেয়া হয়।
চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থাতেই ওই রাতেই অভির বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হ;ত্যা ও আত্ম হ;ত্যা; চেষ্টার দুটি অপরাধে মামলা করেন শ্বশুর রামচন্দ্র সূত্রধর। সেই থেকে পুলিশি পাহারায় অভির চিকিৎসা চলতে থাকে। এমনি অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অভিও মারা যান।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, ছেলে অভি ছিলেন উচ্চবংশীয়। আর তার বিয়ে করা বউ যুথির বংশ পরিচয় তাদের পছন্দনীয় নয়। জাতিগত এ কুসংস্কারের কারণে অভির পরিবার তার বউকে মেনে নেয়নি। যার শেষ পরিণতিতে সম্ভাবনাময় দুটি জীবন চিরতরে ধ্বংস হয়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন, ২৭ অক্টোবর স্ত্রী হ;ত্যার পর নিজেও আত্মহ;ত্যার চেষ্টাকারী অভিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চমেকে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে তারও মৃত্যু হয়।