শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে কী কী করবেন, জেনে নিন বিস্তারিত

উচ্চ মাত্রার ইউরিক অ্যাসিডের উপস্থিতির কারণে হতে পারে গেঁটে বাত, উচ্চ র’ক্তচাপ, কিডনি অকেজো হওয়ার মতো সমস্যা। কিছু কিছু খাবার আছে, যেগুলো খেলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। তা এতটা বেশি যে কিডনি সেটা শরীর থেকে বের করতে পারে না এবং ক্রমেই আপনার শরীরের বাড়তে থাকে এর উপস্থিতি।

এটি বেড়ে গেলে হাঁটুসহ বিভিন্ন অস্থিসন্ধিতে ইউরিক অ্যাসিড জমা হতে থাকে। তাতে অস্থিসন্ধি ফুলে যায় এবং ব্যথা হয়। মূত্রের মাধ্যমে যে পরিমাণ স্বাভাবিক ইউরিক অ্যাসিড বেরিয়ে যায়, তার চেয়ে বেশি পরিমাণ যখন শরীর তৈরি করে, তখনই সমস্যা দেখা দেয়। তবে একটু সচেতন হয়ে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনলে ইউরিক অ্যাসিড অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

এই সমস্যায় যেসব খাবার পরিহার করা উচিত

** বেশি চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া যাবে না। যেমন: গরুর মাংস, খাসির মাংস, ভেড়ার মাংস, মহিষের মাংস ইত্যাদি।

** কলিজা, মগজ, জিহ্বা ইত্যাদি।

** খোসাযুক্ত প্রাণী পরিহার করতে হবে। যেমন: চিংড়ি মাছ, শামুক। এ ছাড়া সামুদ্রিক মাছ, ডিমের কুসুম এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

** সব রকমের ডাল, বাদাম, মটরশুঁটি, শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি ইত্যাদি পরিহার করতে হবে।

** কিছু কিছু শাকসবজি খাওয়া যাবে না। যেমন: পালংশাক, পুঁইশাক, ফুলকপি, মিষ্টিকুমড়া, ঢ্যাঁড়স, পাকা টমেটো।

** অ্যালকোহল, ক্যাফেইন-জাতীয় পানীয়, যেমন: চা, কফি, কোমল পানীয় খাওয়া যাবে না।

** মিষ্টি ফলে ফ্রুকটোস থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিড স্ফটিকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে স্ফটিককে বড় করে দেয়। তাই মিষ্টি ফল পরিহার করাই ভালো।

যেসব খাবারে বাধা নেই
** চর্বিহীন মাংস খেতে হবে। যেমন: ছোট মুরগির মাংস। মাছ, কুসুম ছাড়া ডিম পরিমাণ মতো খাওয়া যাবে।

** বেশি আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। যেমন: সবজি, শাক ইত্যাদি। এই আঁশ স্ফটিকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শরীর থেকে মল আকারে বের হয়ে যায়। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার খেতে হবে। যেমন: লেবু-চা, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল (পেয়ারা, আমলকী, কমলা, মাল্টা), গ্রিন-টি ইত্যাদি খেতে হবে।

** এই সময় চাহিদার তুলনায় বেশি পরিমাণ পানি পান করতে হবে। প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে।

কারা আক্রান্ত হয় বেশি?
** যাদের বংশে বাতের সমস্যা আছে, তারা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

** যারা প্রোটিন-জাতীয় খাবার চাহিদার তুলনায় বেশি খেয়ে থাকেন এবং শাকসবজি কম খায়।

** যারা অ্যালকোহল গ্রহণ করে।

** কিছু কিছু ওষুধ র’ক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

** উচ্চ র’ক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা, হৃদ্রোগের সমস্যা থাকলে তাদের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে।

** যাদের ওজন বেশি, তারাও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

** যারা পানি কম পান করে, তাদের এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা আছে।

** ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

About reviewbd

Check Also

খাওয়ার পর বেল্ট ঢিলা করলেই বিপদ

দুপুরে ভাত খাওয়া ছাড়া বেশিরভাগ বাঙালির চলেই না! কিন্তু ভাত খাওয়ার পরে কয়েকটি কাজ করলে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *