মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকন্ঠ চরমুক্তারপুর এলাকায় চারতলা ভবনের দুই তলা ফ্ল্যাটে গ্যাস লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের দুই শিশু-সন্তানসহ চারজন দগ্ধের ঘটনায় শান্তা বেগম (২৮) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের ৪৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। এনিয়ে ঘটনায় দগ্ধ দুই শিশু সন্তানসহ বাবা-মা চারজনেরই মৃত্যু হলো। বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শান্তার মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা.এস এম আইউব হোসেন। ডা. এস এম আইউব হোসেন জানান, বুধবার রাত আড়াইটার দিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউতে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শান্তা বেগম (২৮) এর মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরে ৪৮ শতাংশ দগ্ধ ছিল।
তিনি আরও জানান, আগ্নিকান্ডের দিন গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) থেকে স্ত্রী শান্তা সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শান্তা খানমের মৃত্যুতে পরিবারটিতে ও কিশোরগঞ্জ শহরের বয়লা এলাকায় আবারও শুরু হয়েছে শোকের মাতম। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) রাজিব খান জানান, গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) ভোর সকালে চরমুক্তারপুর এলাকায় জয়নাল মিয়ার চারতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ফ্ল্যাটে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে একই পরিবারের চারজন ঘুমন্ত অবস্থায় দগ্ধ হন। ঘটনার দিন রাতে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গৃহবধূ শান্তা খানমের দুই শিশু সন্তান ছেলে ইয়াছিন (৫) ও মেয়ে নোহরা (৩) মারা যায়।
এরপর গত শনিবার (৪ ডিসেম্বর) একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গৃহবধূ শান্তা খানমের স্বামী কাওসার (৩৮) মারা যান। নিহত কাওসার খান কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের বয়লা এলাকার খান বাড়ির আব্দুস সালাম খানের ছেলে। তিনি মুন্সীগঞ্জের আবুল খায়ের কোম্পানির রিভার ট্রান্সপোর্ট বিভাগে কর্মরত ছিলেন। চাকরির সূত্রে স্ত্রী শান্তা এবং দুই শিশুসন্তান ইয়াসিন ও নোহরা খানমকে নিয়ে মুন্সীগঞ্জের চর মুক্তারপুরের শাহ সিমেন্ট রোডে জয়নাল মিয়ার চারতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতেন।
গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) ভোর সকালে ভবনটির দ্বিতীয় তলায় গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে কাওসার খানের পরিবারের চারজনই ঘুমন্ত অবস্থায় দগ্ধ হন। ওইদিনই তাদেরকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে একে একে একই পরিবারের দগ্ধ চারজনই চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ওসি রাজিব খান আরও জানান, হাসপাতালে সকল প্রক্রিয়া শেষ করে নিহত গৃহবধূ শান্তা খানমের লাশ বৃহস্পতিবার বিকালে কিশোরগঞ্জে নিয়ে আসা হবে। পরে নামাজে জানাজা শেষে খানবাড়ি কবরস্থানে স্বামী ও দুই সন্তানের পাশে তাকে শান্তাকে দাফন করা হবে।