Spice in Relationship : এক ঘেয়ে বিবাহিত জীবনে বিরক্ত হয়ে উঠেছেন এই মহিলা। সংসারে থেকেই জীবনকে নতুন করে উপভোগ করতে চান তিনি। পরামর্শ চাইছেন বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে।
I Am Bored Of My Marriage: আমি একজন সংসারি মহিলা। স্বামী এবং দুই মেয়েকে নিয়ে আমাদের সুখের সংসার। স্বামীকে আমি খুব ভালোবাসি এবং সম্মান করি। সবসময় তাঁর প্রতি বিশ্বস্তই থেকেছি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যেন বিরক্তি এসে গেছে। অফিস আর বাড়ি. বাড়ি আর দায়িত্ব-কর্তব্য নিয়েই আমাদের জীবন কাটে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলিও ঘরের কাজ করে কাটে। জীবনটা থোড় বড়ি খাঁড়া, আর খাঁড়া বড়ি থোড় হয়ে গেছে। আর ভালো লাগছে না। এরকম করে কতদিন যাবে জানি না। এখন খুবই মনখারাপ লাগে। আজ বাধ্য হয়ে আমি বিশেষজ্ঞের কাছে সব লিখে পাঠাচ্ছি। অনুগ্রহ করে আমায় পরামর্শ দিয়ে (Relationship Tips) সাহায্য করুন।
আমি মানসিকভাবেও ভেঙে পড়ছি
মানসিকভাবেও যেন অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। কিছুই ভালো লাগে না। দিন দিন খিটখিটেও হয়ে পড়েছি। এর প্রভাব অফিসের কাজে পড়ছে। মেয়েরাও বিরক্ত হচ্ছে।
আমি গত ১৩ বছর ধরে বিবাহিত। দুই মেয়েই এখন স্কুলে পড়ে। সংসার আর অফিস সামলে নিই। অফিস থেকে রোজই ফিরতে দেরি হয়। ঘরে ফিরেই টুকটাক কাজ করে খাওয়া আর ঘুম। পরদিন ঘুম থেকে উঠে মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে, স্বামীকে অফিসের জন্য তৈরি করে নিজেও অফিসে বেরিয়ে যাই। ঘরের টুকটাক কাজ করে নিতে হয়।
স্বামীকেও খুব ভালোবাসি
মীকে যথেষ্ট ভালোবাসি। তিনিও আমায় ভালোবাসেন। কিন্তু বিয়ের প্রথম দিকের রোম্যান্স কিংবা মিষ্টি সম্পর্কটা আজ আর নেই। হাতে একটু সময় পেলে বা সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলি মেয়েদের দিতে হয়। ফলে স্বামীর সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়ে চলেছে। আমাদের একান্তে সময় কাটানোর কোনও সময় নেই। দাম্পত্য জীবনের যে স্পার্ক সেটা একেবারে উধাও হয়ে গেছে। দুজনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও নেই বললেই চলে। মেয়েদের বাড়িতে রেখে দুজনে বাইরে যাব সেই সুযোগটাও হয় না। কী যে করি?
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ (Relationship Tips)
পরামর্শ দিচ্ছেন জংখানা জোশির। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিবাহের উত্তেজনা এবং স্ফুলিঙ্গ হ্রাস পাওয়া আমাদের দেশে খুব স্বাভাবিক ঘটনা। একসঙ্গে থাকলেও দম্পতির মধ্যে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়ে থাকে। তার প্রধান কারণ, সংসারের দায়িত্ব, সন্তানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, অফিস, পরিবারের প্রতি কর্তব্য পালন ইত্যাদি।
তার উপর সন্তান জন্মের পর অনেকেই মনে করেন, শারীরিক সম্পর্কের আর প্রয়োজন নেই। তাই এক ঘেয়ে সংসারজীবন চালিয়ে যান একরকম বাধ্য হয়েই। অবশ্য সঙ্গী কিংবা সঙ্গিনীর প্রতি ভালোবাসা, বিশ্বস্ততা, শ্রদ্ধার বিশেষ অভাব হয় না। কিন্তু জোর করে দায়িত্ব কর্তব্য পালনের মধ্যে কোনও বাহাদুরি নেই। কাঠখোট্টা জীবেনর মধ্যে আবেগের স্থান অত্যন্ত জরুরি।
একান্ত সময় কাটান
অনেক দম্পতি একসঙ্গে থাকতে থাকে একে অপরের ক্লোনিং-এ পরিণত হন। একে অপরের উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। একে অপরকে ছাড়া নিরাপত্তহীনতায় ভোগেন। ফলে সঙ্গী যা চান তাই মেনে নেন। আর পরিবারের লোকজনও এতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে যে একান্ত ব্যক্তিগত কিছু সময় কাটানো দরকার তা কেউ ভেবেও দেখেন না। তা সে সন্তান হোক বা পরিবারের বড়রা।
এক্ষেত্রে আপনি যে নিজের প্রয়োজনটা উপলব্ধি করতে পেরেছেন তা প্রশংসনীয়। আপনার সংসার পরিপূর্ণ। আর্থিকভাবেও স্বচ্ছল। এবার মাঝে মাঝে নিজেদের কথাও ভাবুন। এ ব্যাপারে স্বামীর সঙ্গে কথা বলুন। তিনি কী চাইছেন তার বদলে আপনি কী চান সেটা আগে ভাবুন। আপনি যদি দাম্পত্যজীবনে ফের রোমাঞ্চ আনতে চান তাহলে নিজেই উদ্যোগ নিন। প্রথমেই শারীরিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না। তবে রোম্যান্টিক হওয়াই যায়।
স্বামীকে উপহার দিন
মাঝে মাঝেই স্বামীকে একান্তে উপহার দিন। তাঁর প্রিয় খাবার একান্তে খাইয়ে দিন। মেয়েদের সময় দেওয়ার মাঝে স্বামীর সঙ্গেও একান্তে সময় কাটান। মাসে অন্তত একবার স্বামীর সঙ্গে ডিনার ডেটে যান। সেদিন মেয়েদের জন্য অন্য ব্যবস্থা রাখুন। স্বামীর সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোর সময় সংসারের সমস্যা, দৈনন্দিন কাজ, মেয়েদের পড়াশোনা, সংসারের খরচ সম্পর্কে আলোচনা করবেন না। সবচেয়ে বড় কথা নিজেদের মধ্যে কোয়ালিটি টাইম কাটানোর সময় কোনও অপরাধবোধে ভুগবেন না।
একটি আদর্শ সম্পর্ক বজায় রাখতে গেলে মানসিক এবং শারীরিক উভয় ধরনের ঘনিষ্ঠতাই প্রয়োজন। হারিয়ে যাওয়া স্পার্ক নিজেই খুঁজে বের করুন। স্বামীকেও প্ররোচিত করুন। দেখবেন দুজনেই ভালো থাকছেন। কাজের প্রতি এনার্জি আরও বাড়বে। সংসারে সুখ উপচে পড়বে।