ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মীর বিরুদ্ধে তামিমার মেয়ে রাফিয়া হাসান তুবাসহ দুজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। অপর সাক্ষী হলেন রাকিবের মামা লুৎফর রহমান। তালাক না নিয়ে অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী তামিমার বিরুদ্ধে মামলায় এ মামলা করেন রাকিব।
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন। এদিন ক্রিকেটার নাসির ও তার স্ত্রী তামিমা আদালতে হাজিরা দেন। তাদের উপস্থিতিতে সাক্ষী তুবাসহ দুজনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। জবানবন্দি শেষ হলে আসামিপক্ষ তাদের জেরা করেন।
এর আগে, গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন। তবে নাসিরের শাশুড়ি সুমি আক্তারকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার প্রথম স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই দিনই আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর শুনানি শেষে মামলার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও রাকিবের বিয়ে হয়। তাদের আট বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। তামিমা পেশায় কেবিন ক্রু। ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও নাসিরের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা রাকিবের নজরে আসে। পরে পত্রপত্রিকায় তিনি ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারেন। এরপর ডিভোর্স পেপার ছাড়াই বিয়ে করার অভিযোগে নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন রাকিব।
মামলার অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, রাকিবের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকা অবস্থায় নাসিরকে বিয়ে করেন তামিমা, যা ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ। তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নাসির নিজের কাছে নিয়ে গেছেন। তামিমা ও নাসিরের এমন অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে রাকিব ও তার আট বছর বয়সী শিশুকন্যা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আসামিদের এ ধরনের কার্যকলাপে রাকিবের চরম মানহানি হয়েছে, যা তার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
এরপর ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা এবং তামিমার মা সুমি আক্তারকে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাকিবকে তালাক দেননি তামিমা। আইনগতভাবে রাকিব তালাকের কোনো নোটিশও পাননি। তামিমা উল্টো জালিয়াতি করে তালাকের নোটিশ তৈরি করে তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তালাক না দেওয়ায় তামিমা তাম্মী এখনো রাকিবের স্ত্রী হিসেবে বহাল রয়েছেন। দেশের ধর্মীয় বিধিবিধান ও আইন অনুযায়ী এক স্বামীকে তালাক না দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করা অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা তাম্মীর বিয়ে অবৈধ।